ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি সিডনির কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যপক Heidi Norman একটি প্রবন্ধটি রচনা করেন। যেখানে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীর বৈশিষ্ট্যকরণ নিয়ে লেখক ব্রুস পাসকোর বিখ্যাত বই ডার্ক ইমু এবং সুটন ও ওয়ালশ এর সম্প্রতি প্রকাশিত বই Farmers or Hunter-gatherers? The Dark Emu Debate এদুটির মধ্যকার কেন্দ্রীয় বিতর্ক আলোকপাত করেছেন। একইসাথে আদিবাসীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গঠনমূলক কী ধরণের ক্রিটিক্যাল বিতর্ক হওয়া উচিত তা তুলে ধরেছেন। প্রবন্ধটি এ্যানথ্রোবিডি’র জন্য অনুবাদ করেছেন মো. রেদওয়ানুল ইসলাম, তাহজীর ফাইয়াজ চৌধুরী, সানজিদা ইয়াসমিন শুভ্রা ও নিশাত আজাদ ছোঁয়া।
……………………………………………….
নৃবিজ্ঞানী পিটার সুটন এবং প্রত্নতত্ত্ববিদ কেরিন ওয়ালশ সম্প্রতি Farmers or Hunter-gatherers? The Dark Emu Debate নামে একটি বই প্রকাশ করেছেন। এই বইটি “বিজয়ের আগে” অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী জনগণের সামাজিক, আধ্যাত্মিক এবং অর্থনৈতিক জগতের একটি চিত্র বা বিবরণ তুলে ধরেন, যা অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী ইউইন জনগোষ্ঠীর সদস্য, লেখক ব্রুস পাসকোর বিখ্যাত ও প্রশংসিত বই ডার্ক ইমু’তে উপস্থাপিত হয়েছে, তার চেয়ে ভিন্ন।
বইটিতে সুটন এবং ওয়ালশ যে কেন্দ্রীয় বিতর্কটি নিয়ে আলোচনা করেছেন সেটা হলো- অস্ট্রেলিয়ায় ইউরোপিয়ানদের উপনিবেশ স্থাপনের আগে যারা বসবাস করতো তাদেরকে কৃষক অথবা শিকার-সংগ্রাহী- কোন প্রত্যয় দ্বারা চিহ্নিত করা হবে, তা নিয়ে। আর এর মাধ্যমে আমাদের [লেখকদের] মাতৃসূত্রীয় বংশের পরিচয় প্রকাশ পাবে।
সুটন এবং ওয়ালশে যেকোন সমসাময়িক অর্থের এবং আমাদের পূর্বপুরুষরা আসার পূর্বে ঘটনাস্থলে কি ঘটেছিল সে বিতর্কের অবসান করতে চান। এরই সাথে , ইংরেজিতে ব্যবহৃত বিদেশী ভাবনায়, তারা যাকে “শিকার-সংগ্রাহী সমাজ” বা এখনকার “Old People” বলতে চায়, সে সম্পর্কে সত্য চিন্তাভাবনাগুলিকে তাঁরা ফিরিয়ে আনতে চান।
১৭৮৮ সালের আদিবাসী বিশ্বের বৈশিষ্ট্যকরণ নিয়েই এই বই দু’টির মধ্যকার কেন্দ্রীয় বিতর্ক আবর্তিত হয়েছে।
পাসকো উপনিবেশিক সময়ের নথিপত্রগুলোর উপর দৃষ্টি দিয়ে সক্রিয় এবং সৃজনশীল প্রক্রিয়ায় আদিবাসীদের কৃষিকাজ এবং সংশ্লিষ্ট কাজগুলোর ইতিহাস সম্পর্কে উপনিবেশিক পক্ষপাতের একটি ভিন্ন ব্যাখ্যা প্রদান করেন। সুটন এবং ওয়ালশে কৃষি বা “চাষ”/”ফার্মিং” এই প্রত্যয়কে প্রত্যাখ্যান করে বর্ণনাকারীকে “hunter-gatherers-plus” আখ্যায়িত করতে পছন্দ করেন, যাকে তারা “Old People” বলে উল্লেখ করেন।
আদিবাসীদের জগতকে কৃষজ উন্নতি ও অগ্রগতির ধারায় না সাজিয়ে সুটন এবং ওয়ালশ দাবি করেন, সামগ্রিক কর্মকান্ডকে চলমান রাখার প্রক্রিয়াটি অতীব জটিল। এবং এই জটিল প্রক্রিয়াতে অন্তর্ভূক্ত আছে তাদের পরিবেশ ও এর সম্পদ এবং এরই সাথে আছে বিস্তৃত আধ্যাতিক কর্মকান্ড। এই প্রক্রিয়াটি খোদ উদ্যান কিংবা কৃষিকাজের মতই জটিল।
[অস্ট্রেলিয়ার] আদিবাসীরা শিকার-সংগ্রহকারী (hunter-gatherers) নাকি চাষী/কৃষক (farmers/agriculturists) তা নিয়ে নৃবিজ্ঞানী ও প্রত্নতত্ত্ববিদদের মধ্যে বহু সময় ধরে তুমুল বির্তক চলমান।
এসকল বৈশিষ্ট্যকরণ ও শ্রেণিকরণ একাডেমি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যাকে পুরোপুরি বাতিল করে দেয়। এটা মোটেও বিস্ময়কর হবে না যদি নৃবিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় আদিবাসী/এবঅরিজিনদের উপস্থিত না রেখেই একে অপরের মাঠকর্ম, শ্রেণিবিভাগ এবং গবেষণালব্ধ ফলকে পুরোপুরি না হোক আংশিক হলেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।
সুটন ও ওয়ালশ দাবি করেন তাদের এই সমালোচনা শুধুমাত্র তর্কের খাতিরে নয় বরং তাদের উদ্দেশ্য হল ‘পরিচয়ের রাজনীতি ও জাতিগত দোদুল্যমানতাকে এড়িয়ে যাওয়া’।
যাইহোক, তারা উভয়ই স্পষ্টভাবে প্রাতিষ্ঠানিক নৃবিজ্ঞান ও প্রত্নতত্ত্বের দলেই অন্তর্ভূক্ত এবং একই সাথে তাদের কাজ অতীতকে ঘিরেই। তবে পাসকোর মূলত আগ্রহী হন বর্তমানের ইতিহাস নিয়ে। যদিও এই দাবি, এবঅরিজনদের অতীত ব্যাখ্যার যে বির্তক তার মাধ্যমে বর্তমানে তাদের স্বীকৃতির রাজনীতিকে জীবন্ত করে তুলে।
কৃষক অথবা শিকার-সংগ্রাহী?
পাসকো তার বইয়ে এবঅরিজিনদের সামগ্রিক জীবনধারার আখ্যান তুলে ধরেন এমন এক জাতির কাছে যারা এখনও এই ভূমি ও এর অগ্রজদের অস্পষ্ট ঔপনিবেশিক দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখে আসছে। তিনি তার লেখা ও বক্তৃতার মাধ্যমে এই বৃহৎ পাঠক ও শ্রোতাদেরকে একটি সুপ্রাচীন সুরঙ্গের মধ্য দিয়ে নিয়ে গিয়ে বর্তমানকে বুঝানোর চেষ্টা করেন।
অগ্রজদের কৃষিজীবি হিসাবে আখ্যায়িত করার ফলে Dark Emu বইটি প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং সমালোচকদের দ্বারাও সমাদৃত হয়। Dark Emu-কে বছরের সেরা বই হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। এবং এটি ২০১৬ সালে অদিবাসী লেখকদের পুরষ্কার NSW Premier’s Literary Awards লাভ করে।
২০১৮ সালে পাসকো আষ্ট্রেলিয়া কাউন্সিল দ্বারা সাহিত্যে আজীবন সম্মাননা লাভ করেন। তার এই কাজ প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বহু পিয়ার-রিভিউড জার্নালে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করা হয়। যদিও তা সবসময় সমালোচনার উর্ধে ছিল না।
এখন সুটন ও ওয়ালশে “তথ্যগুলোকে বরাবর রাখতে”ই তৎপর হয়ে পরছেন।
সুটন ও ওয়ালশে ডার্ক ইমু নিয়ে সমালোচনায় এবঅরিজিনদের জানা ও বুঝার ক্ষেত্রে নৃবিজ্ঞানীদের যে ঐতিহাসিক গড়িমা আছে তা-ই সময়ে সময়ে প্রকাশিত হয় যা কিনা খুবই রুক্ষ ও পূর্বাচ্ছন্ন মতামত। যেমন তারা বলেন, “পান্ডিত্যপূর্ণ আলোচনার ক্ষেত্রে পাসকো এখনো প্রায় ৫০ বছর পিছনে আছেন” এবং “সংজ্ঞা অনুযায়ী একটি বাগান কখনো বন হতে পারে না”। এই মন্তব্যের মাধ্যমে আমাদের প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দেওয়া হয় পশ্চিমা সংজ্ঞা ও লেবেলগুলিই উত্তম।
কৃষক অথবা শিকারি- সংগ্রহকারী? এই বিতর্কের জায়গায় [ছুটন এবং ওয়ালশ] ডার্ক ইমুতে ব্যবহৃত পূর্বের নথিপত্রের বিষয়ে কঠোরতা দেখিয়েছেন, তার [পাসকোর] লেখনিতে উক্তিগুলো ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, বেছে বেছে বা ইচ্ছামত নেয়া হয়েছে এবং প্রাসঙ্গিক বিশাল আলোচনা বাদ দেওয়া হয়েছে। [ছুটন এবং ওয়ালশ] বইটি এ ধরনের অসংখ্য উদাহরণ প্রদান করেঃ কোন কোন বিষয়গুলো তাৎপর্যপূর্ণ ভ্রান্তি আর পাসকোর কোন কোন অর্থগুলো পরিবর্তন না করে আগের মতোই রাখা হয়েছে।
আরো অন্যান্য আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে গ্রামীণ জীবন এবং জনসংখ্যা সম্পর্কে পাসকোর সিদ্ধান্তকে সুটন এবং ওয়ালশে ত্রুটিপূর্ণ প্রমাণ করেন। তবে, তাদের বইয়ের অন্য আলোচনায় তারা ডার্ক ইমুতে ব্যবহৃত পাসকোর উৎসকে সঠিক বলেও বিবেচনা করেন। সত্য, চিন্তাধারা, ইতিহাস এবং সত্যবাদিতা সম্পর্কে জনপ্রিয় পৌরাণিক কাহিনীর বিরুদ্ধচারণ নিয়ে ডার্ক ইমু বইটির লেখকের নিজ অবস্থান বিষয়ে সুটন এবং ওয়ালশের সমালোচনার কিছু বিষয় অপ্রয়োজনীয় এবং অতিরঞ্জিত।
“হান্টার-গ্যাদারার-প্লাস” অথবা “দি ওল্ড পিপল” হিসেবে আদিবাসীদেরকে কীভাবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে সুটন এবং ওয়ালশের বইটি দুর্দান্ত বর্ণনা প্রদান করে।
[এই বইতে] লেখকদ্বয় ধ্রুপদী আদিবাসীদের জীবনের মানসিক এবং নান্দনিক সংস্কৃতি,আত্মীয়তা সম্পর্কের বিজড়িত বন্ধন,আচার-অনুষ্ঠান,ভিজ্যুয়াল আর্টস এবং ভূমি অধিকার ব্যবস্থার মতো জটিলতা সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন।
আক্রমণকারী বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা নির্দেশিত বাগান ও কৃষিজ পদ্ধতিকে সচেতনভাবে প্রতিরোধ করা সত্ত্বেও কীভাবে ফার্মিংয়ের চেয়ে মানব ভক্তিশ্রদ্ধা এবং দ্বিধাহীন কার্যকলাপের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক প্রসারণ, যাদু এবং স্বপ্ন দেখা প্রতিপালিত হয়, সে বিষয়ে লেখকদ্বয় বেশি জোরারোপ করেন।
ডার্ক ইমু বইটি সম্পর্কে সুটন এবং ওয়ালসের আসল সমালোচনার জায়গা হলো- উপরোক্ত আধ্যাত্মিক দিকগুলো নিয়ে বইটি কোন ধরনের আলোচনা করে নি। এর পরিবর্তে [বইটি] “মানুষের মূল্যমান হিসাবে প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক জটিলতাকে প্রাধান্য দিয়েছে।”
এক্ষেত্রে সুটন এবং ওয়ালশের মতে, এটিই বইটির প্রধান সংকটের জায়গা। যদিও এই মতামতটি [বইটির] পাঠকদের আকুতিকে স্পষ্ট করে, কেননা এটা বস্তগত অর্থনৈতিক ব্যবহারের সাথে বৃহৎভাবে সীমাবদ্ধ এবং “অর্থ, অভিপ্রায়, মূল্যবোধ, সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিক এবং আবেগ থেকে আলাদা।”
আদিবাসীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গঠনমূলক ক্রিটিক্যাল বিতর্ক হওয়া উচিত
অল্প কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় নৃবিজ্ঞানীদের গবেষণাক্ষেত্র দীর্ঘদিন ধরে উত্তরের দিকে বসবাসরত মানুষকেন্দ্রিক ছিল, যাদেরকে নিয়ে অধ্যয়ন করে সুটন এবং ওয়ালশও মুগ্ধ হয়েছেন এবং মাঝেমাঝে তাদেরকে [অস্ট্রেলিয়ার] “বিজয়ের আগে” ও সীমান্তের “অন্য দিক” হিসেবে নির্দেশ করেছেন।
বিশেষত দক্ষিণপূর্ব অস্ট্রেলিয়ার এ অঞ্চলে টিকে থাকাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হলেও ইউরোপিয়ানদের অনুপ্রবেশের পর ঐসকল আদিবাসীদের খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রেক্ষাপট নৃবিজ্ঞানীগণ খুব সমান্যই তুলে আনেন।
১৯৬০ ও ১৯৭০ এর মধ্যকার সময়ের পাবলিক চাহিদার উপর রচিত নৃবৈজ্ঞানিক কাজ এবং কিছু মৌলিক বিষয় ও বিস্তৃত লেখালেখির বেশ কিছু উদাহরণ সুটন এবং ওয়ালশ [তাদের বইতে] উল্লেখ করেন। ক্যাথরিন এবং রোনাল্ড বার্নডথ এর মৌলিক নৃবৈজ্ঞানিক কাজ The World of the First Australians এর একটি উদাহরণ যা [তাদের লেখায়] উদ্ধৃত করেন।
এই সব উদারহণ উপস্থাপনের মাধ্যমে তারা [সুটন এবং ওয়ালস] আদিবাসী বিশ্বের জটিলতা এবং পরিশীলিততার একটি বিস্তৃত এবং ইচ্ছাকৃত অজ্ঞতার সম্পর্কে ডার্ক ইমু বইতে উল্লেখিত দাবির একটি পাল্টা ক্রিটিক্যাল/সমালোচনামূলক জবাব তুলে ধরেছেন।
আমার স্নাতক অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পড়ানোর অভিজ্ঞতা পাস্কোর পর্যবেক্ষণের সাথে মিলে যায়- আদিবাসী জগৎ বা ভবিষ্যত নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা সামান্য বুদ্ধিবৃত্তিক গভীরতা বা ক্ষুধা নিয়ে তাদের পড়াশোনা শুরু করে। তারা তাদের স্কুল পাঠ্যক্রমের পরিধি হিসাবে জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলো বারবারদেখারও উল্লেখ করে।
আদিবাসীদের ভূমি ভোগদখল অধিকারের আইনগত স্বীকৃতি যাযাবরবৃত্তির মীথকে বাতিল করে দেয়, তথাপি জাতীয় রাজনৈতিক আলোচনায় ফার্স্ট পিপলসের/আদি জনগোষ্ঠীর সঠিক স্থান প্রত্যাখ্যান জনসাধারণের সাথে আরও কার্যকর যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তাকে প্রমাণ করে, যার মধ্যে জনপ্রিয় এবং সংশ্লিষ্ট পাঠ্যসমূহকেও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এটি জনসাধারণের কল্পনার মধুর জায়গা যা ডার্ক ইমুর মতো কাজ করে। যাইহোক, গঠনমূলক এবং সমালোচনামূলক বিতর্কের প্রথম জনগণের ইতিহাসকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা উচিত এবং গুরুত্বপূর্ণভাবে আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে বোঝা এবং আরও ভালভাবে পরিবেশন করাও প্রয়োজন।
এই সপ্তাহে “নিরাময় দেশ” প্রতিপাদ্য নিয়ে বার্ষিক NAIDOC উদযাপনের সূচনা হয়েছে। এটি আশা করা যায় যে 1788 এর আগে থেকে, ভবিষ্যতে এবং তার সাথে আমাদের সমস্ত সম্পর্কের ল্যান্ডস্কেপ এবং আমাদের সমস্ত সম্পর্ক তাদের কাছে গুরুত্ব লাভ করবে।
……………………………………………….
মূল প্রবন্ধের লিংক: https://theconversation.com/how-the-dark-emu-debate-limits-representation-of-aboriginal-people-in-australia-163006