সঙ্গীত দারিদ্র্য এবং বৈষম্য সম্পর্কে আমাদের উপলব্ধিকে রূপ দিতে পারে কী?

সঙ্গীত এবং উন্নয়ন অধ্যয়নের মধ্যে কী ধরনের মিল রয়েছে? ডেভিড লুইস, যিনি তার গবেষণায় সামাজিক পরিবর্তনে গানের শক্তিমত্তা অনুসন্ধান করেছেন, তিনি বলেন, আপনি [এই মিল সম্পর্কে] যা ভাবেন তার চেয়েও বেশি [সাদৃশ্য রয়েছে]।

0
354
Print Friendly, PDF & Email

(দারিদ্র্য ও অসমতার বোঝাপড়ায় সঙ্গীতের প্রভাব, এবং সঙ্গীত ও উন্নয়ন অধ্যয়নের মধ্যকার সাদৃশ্য সম্পর্কে London School of Economics (LSE)-এর সাথে নৃবিজ্ঞানী ডেভিড লুইসের কথোপকথনটি এ্যানথ্রোবিডি’র পাঠকদের জন্য অনুবাদ করেছেন খলীলুল্লাহ মুহাম্মাদ বায়েজীদ, রওনক জাহান নীলা ও হুমায়রা মিমি। উল্লেখ্য, এটিকে অধ্যাপক লুইস ও তার সহকর্মী প্রফেসর ডেনিস রজার্স (গ্রাজুয়েট ইনস্টিটিউট, জেনেভা) এবং অধ্যাপক মাইকেল উলকক (বিশ্বব্যাংক এবং হার্ভার্ড) এর গবেষণার সারসংক্ষেপও বলা যায়। লেখকত্রয়ের গবেষণা প্রবন্ধটির শিরোনাম The Sounds of Development: Musical Representation as A(nother) Source of Development Knowledge)

আপনি সবশেষ কবে নাগাদ গান শুনেছেন? সম্ভবত আজ সকালেই [আপনি] রেডিওতে [গান] শুনেছেন। কিংবা গতকাল সুপারমার্কেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনার সময় [শুনেছেন]। সাম্প্রতিক সময়ে হাটাহাটির সময়ে সম্ভবত আপনার হেডফোনগুলো [আপনার] কানে লাগানো ছিল অথবা অনলাইনে ব্রাউজ করার সময় আপনি এখনই প্লে-লিস্টটি শুনছেন।

লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিকস (এলএসই) এর আন্তর্জাতিক উন্নয়নে বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক ডেভিড লুইস (১) সঙ্গীতের পরিব্যপ্তি ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে, “সঙ্গীত এতোটাই বিস্তৃত যে, এটি আমাদের চারপাশেই রয়েছে। এবং এই বিষয়টি [ব্যাপ্তিশীলতা] এটিকে সকল সমাজ এবং সামাজিক দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হিসাবে তুলে ধরেছে।”

অধ্যাপক লুইস তার সহকর্মী, গ্রাজুয়েট ইনস্টিটিউট, জেনেভার অধ্যাপক ডেনিস রজার্স এবং বিশ্বব্যাংক এবং হার্ভার্ডের অধ্যাপক মাইকেল উলকক এর সাথে হিউমানিটিজ এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়নের মধ্যকার আন্ত:সম্পর্ক নিয়ে ১৫ বছর ধরে গবেষণা করছেন। আর এই হিউমানিটিজের মধ্যে সাহিত্য এবং চলচ্চিত্রের পাশাপাশি সংগীতও [তাদের গবেষণায়] অন্তর্ভূক্ত। 

লেখকত্রয় সম্প্রতি রোহিংটন মিস্ত্রি’র (Rohinton Mistry) আ ফাইন ব্যালান্স (A Fine Balance) (২) শিরোনামের একটি অসাধারণ শক্তিশালী ভারতীয় উপন্যাস পাঠ করেন। এবং এ বইয়ের উপর নিজেদের আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তারা উপলব্ধি করেন যে, সামাজিক বিজ্ঞানীরা প্রায়শই দারিদ্র্য এবং বৈষম্যের আশপাশের ইস্যুগুলো প্রকাশ করতে ফিকশনের গুরুত্ব এবং শক্তিমত্তাকে অবমূল্যায়ন করেন। রোহিংটন মিস্ত্রি’র চিন্তাভাবনা দ্বারা উৎসাহিত হয়ে তারা জনপ্রিয় সংস্কৃতি এবং উন্নয়ন সম্পর্কিত ইস্যুগুলোর মধ্যকার আন্ত:সম্পর্ক আরো গভীরভাবে অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নেন। 

5211. sy475
https://www.goodreads.com/book/show/5211.A_Fine_Balance

বব ডিলান কীভাবে উন্নয়ন অধ্যয়নের ভূবনে অন্তর্দৃষ্টি দিতে পারেন?

অধ্যাপক লুইস এবং তার সহকর্মীরা তাদের গবেষণাপত্রে (৩) প্রতিরোধ, উন্নয়ন হস্তক্ষেপের অংশ, পণ্য এবং অধিকৃত বস্তু হিসাবে এবং বিদেশী সহায়তা ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সম্পর্কে জনসাধারণের বোঝাবুঝি তৈরিতে সাহায্যকারী একটি শক্তি হিসাবে সঙ্গীতের ভূমিকার উপর মনোনিবেশ করেছেন।

সঙ্গীত ও উন্নয়ন বিষয়ক এই অধ্যয়নে নিজ আগ্রহের কারণ ব্যাখ্যায় অধ্যাপক লুইস বলেন, “নৃবিজ্ঞানের সাথে যুক্ত থাকায় আমি জ্ঞানের ব্যবস্থা এবং উন্নয়ন বিকাশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিকগুলো বুঝতে আগ্রহী। [এমনকি] আমি গান শুনতে এবং তৈরি করতেও ভালোবাসি।” (৪)

উক্ত প্রবন্ধে লেখকত্রয় যে বিষয়গুলোর উপর জোরারোপ করেছেন, সেগুলোর মধ্যে “প্রতিবাদ” হিসাবে সংগীতের ভূমিকা অন্যতম। [প্রতিবাদের] একটি ধরণ হিসেবে এটি [সঙ্গীত] দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক পরিবর্তনের জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছে এবং [এতে] খোদ সামাজিক পরিবর্তন প্রতিফলিত হয়েছে। ১৯৪০’র দশকে আফ্রিকায় ডিকলোনাইজেশন সংগ্রাম তীব্র হওয়ার সাথে সাথে ঘানার “হাই লাইফ” নৃত্য সঙ্গীতে দৃশ্যের বদলে স্বনির্ভরতার জন্য কোয়েম এনক্রুমার আন্দোলনের সুস্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যায়। ১৯৬০’র দশকে বব ডিলান, জোয়ান বায়েজ এবং জন লেননের মতো গায়কবৃন্দ পশ্চিমা বিশ্বে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়েছিলেন। তেমনি বর্তমান সময়ে সেনেগালের নারী গায়কদের সম্মিলিত ব্যাণ্ড “গেঞ্জি হিপ হপ” (Genji Hip Hop) নারীদের লিঙ্গীয় সহিংসতা প্রতিরোধের একটি অন্যতম উদ্যোগ। (৫)

১৯৭০’র দশকে যুক্তরাজ্যের “রক এগেইনস্ট রেসিজম” (Rock Against Racism)(৬) আন্দোলন একটি সংহতির রাজনীতি তৈরিতে কীভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে লেখকত্রয় তাদের প্রবন্ধে এটির একটি রূপরেখা তুলে ধরেছেন। উল্লেখ্য, এটি [“রক এগেইনস্ট রেসিজম”] গায়কদের একটি সম্মিলিত উদ্যোগের নাম, যেখানে তারা গিগস, কার্নিভাল এবং ট্যুরের (gigs, carnivals and tours) মাধ্যমে বর্ণবাদবিরোধী বার্তা ছড়িয়ে দিতেন। এই আন্দোলন গ্লোবাল উত্তরের পাঙ্ক রকের (punk rock) উদীয়মান ঐতিহ্যগুলোর সাথে গ্লোবাল দক্ষিণের রেগাই (reggae) ধারাকে সংযুক্ত করেছিল। এবং এ আন্দোলন দু’টি ধারার প্রতিরোধের বিভিন্ন উপ-সংস্কৃতিগুলোকে একত্রিত করে এবং ফিউশন ঘটায় [যার মধ্য দিয়ে সংহতির রাজনীতি গঠনে সঙ্গীতের ভূমিকা আরো বৃদ্ধি পায়।] 

১৯৮০’র দশকের পরবর্তী রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনগুলোও এই ভিত্তির উপর গড়ে উঠেছিল। এবং জনসাধারণকে বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সচেতন করতে উপরোক্ত আন্দোলনগুলো তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। উদাহরণস্বরূপ ১৯৮৮ সালে লন্ডনে নেলসন ম্যান্ডেলার ৭০তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত বর্ণবাদবিরোধী কনসার্টের প্রসঙ্গ টানা যায়, যেখানে তাকে বিশেষভাবে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

প্রতিরোধের কৌশল: সঙ্গীত যেভাবে সংহতির রাজনীতিকে বিস্তৃত করতে পারে

অধ্যাপক লুইস যুক্তি দিয়ে দেখিয়েছেন, প্রতিবাদ সঙ্গীত সংহতির রাজনীতি প্রকাশের একটি উপায়মাত্র নয়, বরং এটি অসমতা এবং অবিচারের ধারণা জনশ্রোতার কাছে পৌঁছানোর একটি পদ্ধতিও বটে।

তার জীবনের শুরুতে রাজনৈতিক সঙ্গীতের প্রভাবের কথা স্মরণ করতে গিয়ে তিনি বলেন: “রক এগেইনস্ট রেসিজম” (Rock Against Racism)-এর মতো আন্দোলনগুলো ছিল বিশ্বকে চেনার, গঠনমূলক রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার এবং একজন বিশ্বনাগরিক হওয়ার ব্যাপারে চিন্তা করার একটি উপায়। 

সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিবাদ সঙ্গীত ট্রাম্প-বিরোধী এবং ব্রেক্সিট-বিরোধী সুরের দ্বারা কোলাহলময় রাজনৈতিক আবহাওয়ার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে গতিশীল ভূমিকা রেখে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। রাশিয়ান নারীবাদী পাঙ্ক সঙ্গীতগোষ্ঠী  “পুশি রায়ট” (Pussy Riot) পুতিনের শাসনের নিন্দা জানিয়ে গান লিখে প্রায়ই শিরোনামে আসে।

প্রতিবাদ সঙ্গীত সাধারণত রাজনীতির বার্তা বহনের সাথে সম্পর্কিত। লেখকত্রয় তাদের এই প্রবন্ধে প্রথা এবং তহবিল সংগ্রহ কার্যক্রমের জন্য সঙ্গীতের ব্যবহারের মধ্যে পার্থক্য সুস্পষ্ট করে।

১৯৭১ সালে আয়োজিত “কনসার্ট ফর বাংলাদেশ”র  (Concert for Bangladesh) (৭) মতো সঙ্গীতের ইভেন্টগুলো তহবিল গঠন এবং অর্থ সংগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। উল্লেখ্য ব্রিটিশ রক ব্যান্ড বিটল (Beatle) এর জর্জ হ্যারিসন (George Harrison) এবং ইন্ডিয়ান সুরকার রবি শঙ্কর (Ravi Shankar) উক্ত কনসার্টটি আয়োজন করেছিলেন। কনসার্টটির আন্তর্জাতিক সংহতির প্রগতিশীল বার্তা ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে গবেষকগণ যুক্তি দেন যে, কনসার্টটিতে অনাহারী জনগনের চিত্র ব্যবহার করলেও এই সংকটের পিছনে কাঠামোগত অথবা মূল রাজনৈতিক সংকট তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে।

https://cutt.ly/4mNLbos

অধ্যাপক লুইস আরো বলেন, “যদিও কনসার্ট ফর বাংলাদেশ (Concert for Bangladesh) রাজনৈতিক ও মানবিক ইস্যু সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে সাংস্কৃতিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন ছিল, কিন্তু আপনি এটিও দেখতে পাবেন যে, ‘তৃতীয় বিশ্ব’কে ক্ষুধা ও বিপর্যয়ের স্থান হিসাবে উপস্থাপন নিয়ে প্রয়োজনীয় আলাপ তুলতে কীভাবে এটি ব্যর্থ হয়েছে, কীভাবে এটি প্যাসিভ স্টেরিওটাইপগুলোকে আরো শক্তিশালী করেছে এবং “লাইভ এইডে”র (“Live Aid”) মতো আরো [অসংখ্য] প্রশ্নবিদ্ধ ইভেন্টগুলো সম্পর্কেও এই এটি কোন সুস্পষ্ট বক্তব্য হাজির করে না।

সৃজনশীলতা হিসাবে জনপ্রিয় সংস্কৃতির মধ্যকার উত্তেজনার প্রসঙ্গ, সামাজিক পরিবর্তন প্রচারের একটি হাতিয়ার হিসাবে এটিকে [সঙ্গীত] যান্ত্রিককরণের প্রচেষ্টা এবং সংস্কৃতির পণ্যকরণ- গবেষকবৃন্দ সঙ্গীত সম্পর্কিত অধ্যয়নে এই সকল বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে অত্যন্ত আগ্রহী। “সঙ্গীত সমাজের সকলকিছুকে প্রতিফলিত করে। এটি যেমন মানুষকে অবহিত এবং একত্রিত করে, তেমনি আমাদের বিভক্তও করতে পারে।

সংযোগ স্থাপন এবং বাধাকে ভেঙ্গে ফেলার শক্তি সংগীতের রয়েছে

এটি বিবেচনা করে অধ্যাপক লুইস বিশ্ব সংগীতের (“world music”) উদাহরনটি সামনে আনেন। এটি [“world music”] মূলত ১৯৮০’র দশকে তৈরি হওয়া একটি মার্কেটিং ক্যাটেগরি। তিনি একটা দৃষ্টিকোণ থেকে যুক্তি দেখান যে, এই শ্রেণীকরনটি অ-পশ্চিমা সমাজের সংস্কৃতিকে পণ্যে পরিণত করে। তবুও এটা অগ্রাহ্য করা অসম্ভব যে সঙ্গীতেরও একটা সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সম্ভাবনা আছে। তবুও সঙ্গীতেরও যে একটা সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ক্ষমতা রয়েছে তা অগ্রাহ্য করা সম্ভব নয়। এটি মানুষের কাছে নতুন নতুন শব্দ এবং ধারণা প্রকাশের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক বিনিময় করতে পারে। তিনি স্বীকার করেন যে, “সঙ্গীতে এই মতবিরোধগুলো সর্বদা চলমান।”

হেনরি ওয়াডসওর্থের (Henry Wadsworth) লংফেলো (Longfellow) কবিতার একটি বিখ্যাত লাইন, “সংগীত হলো মানবজাতির সার্বজনীন ভাষা।” এটির উদ্ধৃতি দিয়ে গবেষকরা যুক্তি দেখান যে, বাধাকে ভেঙ্গে ফেলার ক্ষমতা সংগীতের আছে এবং এটি মানুষকে আবেগ ও সংহতি প্রকাশ করতে অর্থপূর্ণভাবে সক্ষম করে তোলে। শঙ্কা এবং অনিশ্চিত সময়ে সংগীত মানুষকে একত্রিত করতে সাহায্য করতে পারে।

…………………………………………….

টীকা:

১. ডেভিড লুইস একজন ব্রিটিশ সামাজিক বিজ্ঞানী। তিনি দ্যা লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিকস এন্ড পলিটিক্যাল সাইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগের নৃবিজ্ঞান এবং উন্নয়ন বিষয়ের অধ্যাপক। তার বেশিরভাগ কাজ হলো উন্নয়নের কার্যক্রম এবং পদ্ধতির সাথে জনগনের মনোভাব সুস্পষ্টভাবে বোঝা। সঙ্গীত,ফিকশন এবং চলচ্চিত্রসহ জনপ্রিয় সংস্কৃতির সাথে উন্নয়নের উপস্থাপন/সম্পর্ক নিয়ে তার গভীর আগ্রহ রয়েছে।তার বইগুলো হলো-Bangladesh: Politics, Economy and Civil Society (2011), Non-Governmental Organization, Management and Development(2014) এবং Anthropology and Development: Challenges for the 21st Century (2015, with Katy Gerdner)। গবেষকের পাশাপাশি তিনি একজন গায়ক এবং গীতিকার।

২. A Fine Balance ঐতিহাসিক উপন্যাসটি রহিনটন মিস্ত্রির দ্বিতীয় উপন্যাস।এটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। বইটি ইন্ডিয়ার “একটি অজ্ঞাতনামা শহর” হিসেবে লিখা হয়েছে।বইটিতে লেখক ১৯৪৫ সালে স্বাধীনতার পর ইন্ডিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী জরুরি ভিত্তিতে ইন্ডিয়ার সমাজের যে পরিবর্তন করেছিলেন তা ফুটিয়ে তোলেন।বইটিতে লেখক ইন্দিরা গান্ধীর সমালোচনা করেন এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে ইন্ডিয়ার যে পরিবর্তন ঘটে তা তুলে ধরেন।

৩. অধ্যাপক লুইস তার সহকর্মী, প্রফেসর ডেনিস রজার্স (গ্রাজুয়েট ইনস্টিটিউট, জেনেভা) এবং অধ্যাপক মাইকেল উলকক (বিশ্বব্যাংক এবং হার্ভার্ড) এই মূল গবেষণা প্রবন্ধের শিরোনাম The Sounds of Development: Musical Representation as A(nother) Source of Development Knowledge ও লিঙ্ক https://www.lse.ac.uk/research/research-for-the-world/society/can-music-shape-our-understanding-of-poverty-and-inequality

৪. সাউন্ড ক্লাউডে অধ্যাপক ডেভিড লুইসের NoStraightLine নামের অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যেখানে   Garden Of Thorns, Best Tune, ও  So Sing শিরোনামে ৩ টি অডিও সঙ্গীত আপলোড করা হয়েছে। আগ্রহী শ্রোতা  এই লিঙ্কে যেয়ে শুনতে পারবেন- https://soundcloud.com/nostraightline

৫. গেঞ্জি হিপ হপ (Genji Hip Hop collective) প্রায় সেনেগালের ৭০ জন নারীর একটি সম্মিলিত উদ্যোগের নাম। এটি মূলত সেনেগালের রাজধানী ডাকারকেন্দ্রীক সাংস্কৃতিক স্টেরিওটাইপস এবং লিঙ্গ সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী বা লড়াইকারী সম্মিলিত নারী হিপ হপ দল। এতে র‌্যাপারস, গায়ক, ডিজে এবং গ্রাফিতি শিল্পীরা রয়েছেন। একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ হিসাবে এটির যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তিতে স্থানীয় এবং বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলিতে আয়োজিত বিভিন্ন কনসার্ট এবং প্রকিবাদে গেঞ্জি হিপ হপ যোগ দেয়/অংশগ্রহণ করে। এই দলটির গানের বিষয়, লিরিক্স এবং কনসার্টে নারীদের অধিকার, সেগুলোকে ঘিরে সামাজিক নিষেধাজ্ঞাগুলোর (যেমন অনাচার, পারিবারিক চাপ এবং ধর্ষণ) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। আরো দেখুন- https://headlinermagazine.net/blog/2020/01/06/genji-hip-hop-women-fighting-wrongs-with-rap/

৬. Rock and Racism ছিল একটি রাজনৈতিক এবং সামাজিক আন্দোলন যা ১৯৭৬ সালে ব্রিটেনের রাস্তায় বর্ণবাদীদের আক্রমণের প্রতিবাদের মাধ্যমে সূচনা হয়েছিল।তাদের কার্যক্রম ১৯৭৬ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত ছিল।তাদের সংক্ষেপে RAR নামে সম্বোধন করা হত।শ্বেতাঙ্গ এবং কৃষ্ণাঙ্গ সকলের কাছেই তাদের গান পছন্দের ছিল।তারা তরুণ প্রজন্মদের বর্ণবাদের প্রতি নিরুৎসাহী করতে সক্ষম হয়েছিল।

৭. দি কনসার্ট ফর বাংলাদেশ বাংলাদেশীদের কাছে খুবই পরিচিত। এটির আয়োজক  ছিলেন বিটলসের গিটারিস্ট জর্জ হ্যারিসন এবং ভারতের সেতারবাদক রবি শঙ্কর। এই শো টি অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ১৯৭১ সালের ১লা আগস্টে নিউ ইয়র্ক সিটির ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে। মূলত বিশ্ববাসীর কাছে পুর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত গণহত্যা এবং স্বাধীনতা যুদ্ধ বিশ্বের দরবারে পৌছানো ছিলো এই কনসার্টের উদ্দেশ্য। কনসার্টি ছিলো সবচেয়ে বেশি বিক্রিত লাইভ এলবাম। ইউনিসেফের মতে, এই কনসার্টে প্রায় ৪০ হাজার লোক উপস্থিত ছিলো। এক দশক পরে, রবি শঙ্কর এই কনসার্টের সফলতা নিয়ে বললেন একদিন পুরো পৃথিবী বাংলাদেশের নাম জানবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here