নৃ-বিজ্ঞানী মার্গারেট মিড কে তার এক শিক্ষার্থী জিজ্ঞেস করেছিলো সভ্যতার প্রথম চিহ্ন কী…সেই শিক্ষার্থী ভেবেছিলো মার্গারেট হয়তো বলবে মাছ ধরার যন্ত্র বা মাটির তৈজসপত্র বা পাথরের কোনো অস্ত্র। কিন্তু মার্গারেট তার কিছুই না বলে সেই শিক্ষার্থীকে একটা গল্প শোনালো। একটা নৃতাত্ত্বিক সাইটে প্রায় ১৫ হাজার বছর আগের প্রাচীন মানুষের একটা হাড় পাওয়া যায়। হাড়টি ফিমার (কোমরের নিম্নাংশ থেকে হাঁটু পর্যন্ত লম্বা হাড় যেটা মানবদেহের সবচাইতে লম্বা হাড়)। প্রাচীন সেই হাড়টি গবেষণা করে দেখা যায় হাড়টি ভেঙেছিলো আবার জোড়াও লেগেছে। সাধারণত চিকিৎসা ছাড়া এই হাড় জোড়া লাগতে ৬ সপ্তাহ লাগে।
নৃবিজ্ঞানী মার্গারেট মিড বললো এই জোড়া লাগা হাড়টাই সভ্যতার প্রথম চিহ্ন। প্রাণিজগতে পায়ের হাড় ভাঙা মানে তার মোটামুটি টিকে থাকার আশা শেষ। কারণ চলাফেরা করতে না পারলে সে খেতে পাবেনা, শিকার করতে পারবেনা, অন্য হিংস্র প্রাণির খাদ্যে পরিণত হবে হাড় সেরে উঠার আগেই।
তাই জোড়া লাগা ফিমারের অর্থ হলো কেউ একজন বা অনেকে সেই প্রাণির যত্ন নিয়েছে, তার হাড় সেরে উঠা পর্যন্ত তাকে খাইয়েছে, সেবা করেছে। সভ্যতার শুরু ঠিক এই জায়গা থেকেই। যখন আমরা সংকটে, অন্যের বিপদে এগিয়ে আসি, তাকে অভয় দেই, সেবা করি তখন একটা সভ্যতা পূর্ণতা লাভ করে, টিকে থাকে।
এই ব্যাপারটা আমরা যত বুঝবো ততো শুদ্ধ হবো, ততো উন্নত হবো।
লেখক: আরাফাত মোহাম্মদ নোমান (অনুবাদ সংগৃহীত)