• Home
  • About us
    • AnthroBD
    • Speech of Chairman
    • Speech of Managing Director
    • Our Goals
    • Approach
    • Team
    • History
    • Achievement
    • Contact Us
  • Key Focus
    • Education
    • Research
      • Disaster Management
      • Development Issues
    • Training
    • Program
      • Public Health
      • Humanitarian Activities
      • Gender Rights
  • Gallery
    • Photo gallery
    • Video gallery
  • Career
    • Current Vacancies
      • Full time
      • Internship
      • Campus Ambassador
      • Voluntary Work
    • FAQs
  • Support Us
    • Donate for Humanity
    • Partnership
    • Join Our Community
No Result
View All Result
AnthroBD
  • Home
  • About us
    • AnthroBD
    • Speech of Chairman
    • Speech of Managing Director
    • Our Goals
    • Approach
    • Team
    • History
    • Achievement
    • Contact Us
  • Key Focus
    • Education
    • Research
      • Disaster Management
      • Development Issues
    • Training
    • Program
      • Public Health
      • Humanitarian Activities
      • Gender Rights
  • Gallery
    • Photo gallery
    • Video gallery
  • Career
    • Current Vacancies
      • Full time
      • Internship
      • Campus Ambassador
      • Voluntary Work
    • FAQs
  • Support Us
    • Donate for Humanity
    • Partnership
    • Join Our Community
No Result
View All Result
AnthroBD
No Result
View All Result

নৃবিজ্ঞানঃ সংজ্ঞায়ন ও আলোচ্য বিষয়

October 23, 2024

পৃথিবীর সৃষ্টিলগ্ন হতে আজ পর্যন্ত যে সকল জীব ও জড়ের জন্ম হয়েছে মানুষ তার মধ্যে সবচেয়ে রহস্যময় ও কৌতূহলোদ্দীপক। নিজেকে নিয়ে যতটুকু জানার আগ্রহ কাজ করে সেই সাথে তার পারিপার্শ্বিক অবস্থাও ভাবনায় ফেলে৷ আদিম সমাজের যারা একসময় আগুনের ব্যবহার ই জানতো না কালের বিবর্তনে সে পশু শিকার ও ফলমূল সংগ্রহ থেকে শুরু করে আজকের আধুনিক কৃষি যন্ত্রের সাহায্যে চাষাবাদ করে। লিখন পদ্ধতির আবিষ্কার হয়, সভ্যতার সূচনা হয়। বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতিকে জয় করে নিজেকে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। প্রকৃতি পূজা থেকে শুরু হয়ে নিজস্ব বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে সে এখন চাঁদে পা রেখেছে। ফলশ্রুতিতে,সে একই সাথে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জীবে পরিণত হয়েছে। ব্ল্যাক ডেথের মতো মহামারীর সাথে লড়াই করে এখন কোভিড-১৯ এর সাথে লড়াই চলছে৷ এ যেনো টিকে থাকার সংগ্রাম৷ শুধু মানুষ নয় অন্যান্য প্রাণীও রয়েছে এই লড়াইয়ে। সময়ের পরিক্রমায় অনেক প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে,  কোনোটা আবার বিপন্ন প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। এই মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর আদিম থেকে বর্তমান অবস্থা, প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে তার সংগ্রাম এবং ভবিষ্যত ভাবনার অধ্যয়ন ই নৃবিজ্ঞান।

নৃবিজ্ঞানের সংজ্ঞায়নেই তার বিশেষ চরিত্র ফুটে উঠে। বেশিরভাগ ই মনে করেন যে নৃবিজ্ঞান শুধু ফসিল, অ-শিল্পায়িত সমাজ বা পশ্চিমা সমাজের বাহিরের সমাজগুলো নিয়ে অনুসন্ধান করে ও গবেষণা চালায়। কিন্তু নৃবিজ্ঞান হচ্ছে সমগ্র কিছুর অধ্যয়ন। নৃবিজ্ঞানকে বলা হয় সামগ্রিক বিজ্ঞান। সামগ্রিক বলতে মানুষের সকল অবস্থাঃ অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ ; জৈবিক, সমাজ, ভাষা এবং সংস্কৃতিকে অধ্যয়ন করাকে বুঝায়।

নৃবিজ্ঞান হচ্ছে তুলনামূলক অধ্যয়ন যা আদিম ও আধুনিক, সরল ও জটিল, স্থানীয় ও বৈশ্বিক সকল সমাজ নিয়ে আলোচনা করে। অন্যান্য সামাজিক বিজ্ঞান শুধুমাত্র নির্দিষ্ট একটি সমাজ বা দেশের উপরই দৃষ্টি নিবদ্ধ করে রাখে৷ নৃবিজ্ঞান মানব সত্তার অতীত ও বর্তমানের সাথে জড়িত কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি হয় এবং এগুলোর ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়াস চালায়৷

দেহাবশেষ ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার ও নিরীক্ষা করে মানুষের উৎপত্তি নিয়ে যে রহস্য তার সমাধান দেয়৷ এপ (Ape) হতে আজকের আধুনিক মানুষে বিকশিত হওয়া ও আমাদের পূর্ব পুরুষরা কিভাবে তাদের হতে আলাদা হয়েছে তার বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা দেয়। কখন,কোথায় ও কিভাবে হোমো সেপিয়েন্সের উৎপত্তি হয়েছে? আমাদের প্রজাতি কিভাবে পরিবর্তন হয়েছে? এখন আমরা কোন অবস্থায় আছি ও কি করতেছি এসব বিভিন্ন প্রশ্নের ব্যাখ্যা দাঁড় করায়৷ এছাড়াও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন কিভাবে জৈবিক পরিবর্তনে প্রভাবিত করে তার ব্যাখ্যা দেয়, আমাদের বর্গ, হোমো, এক মিলিয়ন বছর আগে থেকেই পরিবর্তন হয়ে আসছে। মানুষ প্রতিনিয়ত জৈবিকভাবে ও সাংস্কৃতিকভাবে পরিবর্তন হচ্ছে তার ব্যাখ্যা দেয়। অন্যভাবে বললে, নৃবিজ্ঞান হচ্ছে সমগ্র মানব জাতির অধ্যয়ন৷ এর উদ্দেশ হচ্ছে মানুষ ও তার আচরণের সাধারনীকরণ ও তার বৈচিত্র্যতা বুঝার জন্য একটি নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণে পৌছানো।

সংক্ষেপে বললে, নৃবিজ্ঞান মানুষের সমগ্র অভিজ্ঞতার মর্ম বুঝার প্রয়াস চালায়। এরিক উলফের মতে, ‘নৃবিজ্ঞান হচ্ছে মানবিকের মধ্যে সবচেয়ে বিজ্ঞানসম্মত এবং বিজ্ঞানের মধ্যে সবচেয়ে মানবিক।’ রবার্ট গর্ডনের মতে, ‘যেখানে একজন সমাজবিজ্ঞানী ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ফুলের সৌন্দর্য দেখে পাপড়ি দিয়ে সেখানে একজন নৃবিজ্ঞানী পাহাড়ের চূড়ায় উঠে পুরো মাঠের সৌন্দর্যে আলোকপাত করেন৷ অর্থাৎ সবকিছু ই নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়।’ ম্যালিনোস্কির মতে, ‘নৃবিজ্ঞান হচ্ছে মানুষ ও সংস্কৃতির একটি বিজ্ঞান সম্মত অধ্যয়ন।’

নৃবিজ্ঞান একটি পূর্নাঙ্গ জ্ঞানকান্ড হিসেবে আজ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দ্বিধা মোকাবেলা করার জন্য একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি প্রদান করে: কিভাবে বিভিন্ন চেহারার মানুষ, পারস্পরিকভাবে বোধগম্য ভাষা এবং ভিন্ন ভিন্ন জীবনধারা শান্তিপূর্ণভাবে একসাথে চলতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করে৷

নৃবিজ্ঞানের বিশেষত্ব তার চারটি শাখার সাথে জড়িত। এগুলো হলঃ

১। সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান

২। জৈবিক নৃবিজ্ঞান

৩। ভাষাতাত্ত্বিক নৃবিজ্ঞান এবং

৪ ৷ প্রত্মতত্ত্ব

সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানঃ সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান হচ্ছে মানব সমাজ এবং সংস্কৃতির অধ্যয়ন, এটি নৃবিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যা সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বিষয়গুলোর সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যগুলো বর্ণনা, বিশ্লেষণ, ও ব্যাখ্যা দানের প্রয়াস চালায়।

সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানে দুইটি শব্দ বহুল পরিচিত। একটি হচ্ছে সমাজ ও অপরটি হচ্ছে সংস্কৃতি। সমাজ হচ্ছে এমন একটি গোষ্ঠী যার সদস্যরা বেঁচে থাকার জন্য বা কল্যাণের জন্য একে অপরের উপর নির্ভর করে থাকে। আর সংস্কৃতি হচ্ছে মানুষের সমগ্র কাজের একটি সামগ্রিক রূপ! মানুষ ই একমাত্র প্রাণী যার সংস্কৃতি রয়েছে এবং যেসব বৈশিষ্ট্যের জন্য অন্যান্য প্রাইমেট হতে মানুষ আলাদা তার মধ্যে সংস্কৃতি হচ্ছে অন্যতম৷ সংস্কৃতির সবচেয়ে প্রভাবশালী সংজ্ঞা প্রদান করেছেন ই.বি.টাইলর। তার মতে, সংস্কৃতি হচ্ছে জ্ঞান, বিজ্ঞান, আচার- বিশ্বাস, শিল্পকলা, নীতিবোধ, আইনকানুন, অনুশীলন, অভ্যাস যা মানুষ সমাজে বসবাস করতে গিয়ে আয়ত্ত করে।

সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য অধ্যয়ন এবং ব্যাখ্যা করার জন্য, সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানীরা দুই ধরণের কার্যকলাপে নিযুক্ত হন:

ক) এথনোগ্রাফি

খ) এথনোলজি

এথনোগ্রাফি হচ্ছে নির্দিষ্ট একটি দল বা সমাজ বা  সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর নিবিড় পর্যবেক্ষণ। একজন এথনোগ্রাফার যেকোনো একটি নির্দিষ্ট সমাজে গিয়ে ঐ সমাজের বিভিন্ন সংস্কৃতির উপাত্ত সংগ্রহ করে থাকেন তবে তা অন্যান্য সামাজিক বিজ্ঞানের বিষয় হতে একদমই আলাদা! এথনোলজি হচ্ছে এথনোগ্রাফিতে যেসব উপাত্তগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে সেগুলোর ফলাফলের নিরীক্ষণ, ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ। সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানীরা সংস্কৃতিকে একটি সর্বজনীন মানবিক ঘটনা এবং মানুষের একটি গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য হিসাবে বোঝার চেষ্টা করেন।

তারা নির্দিষ্ট সংস্কৃতির গতিশীলতা পরীক্ষা করতে এবং সমস্ত সংস্কৃতির অন্তর্নিহিত সাধারণ নীতিগুলি অনুসন্ধান করতে বিভিন্ন গবেষণা কৌশল ব্যবহার করেন। সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানীরা দেখায় যে বিভিন্ন সমাজ তাদের পরিবেশের সাথে কিভাবে খাপ খায়? অর্থাৎ তারা কিভাবে খাদ্য উৎপাদন বা সংগ্রহ করে, তাদের অর্থনীতির কাঠামো কিরকম, কিভাবে ঐ সমাজের সদস্যরা সদস্যরা বিশ্ব এবং এতে তাদের অবস্থান বোঝে, বা বিভিন্ন সংস্কৃতির সদস্যরা কিভাবে যোগাযোগ করে এবং একে অপরকে পরিবর্তন করে ইত্যাদি।

সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা রয়েছে। American Anthropological Association এর একটি সূচকে তা দেখা যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেঃ

ক) রাজনৈতিক ও আইনগত নৃবিজ্ঞান ; যা জাতীয়তাবাদ, নাগরিকত্ব, রাষ্ট্র, উপনিবেশবাদ এবং বিশ্ববাদের বিষয়গুলির সাথে সম্পর্কিত;

খ) মানবিক নৃবিজ্ঞান ; যা মানুষের মুখোমুখি ব্যক্তিগত, নৈতিক এবং রাজনৈতিক পছন্দগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে;

গ) ভিজ্যুয়াল নৃবিজ্ঞান, যা ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা এবং মিডিয়ার অধ্যয়ন

দৈহিক বা জৈবিক নৃবিজ্ঞানঃ নৃবিজ্ঞান সময় এবং স্থানের ভিত্তিতে মানুষের বৈচিত্র্যতাকে অধ্যয়ন করে। উল্লেখ্য যে দৈহিক ও জৈবিক নৃবিজ্ঞান এক নয় এবং এদের আলোচ্য বিষয়ও ভিন্ন হয়৷ এক্ষেত্রে জৈবিক নৃবিজ্ঞানের অধ্যয়ন মানবজাতির জৈবিক বৈচিত্র্যকে কেন্দ্র করে সজ্জিত। জৈবিক নৃবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুকে; জীবাশ্ম গবেষণা দ্বারা মানব জাতির বিবর্তন (Paleo Anthropology), মানব বংশগতিবিদ্যা (Human Genetics), মানব জাতির ক্রমবিকাশ, মানব দেহের নমনীয়তা এবং বৈরি পরিবেশকে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা, উচ্চতর প্রাইমেটসহ, শিম্পাঞ্জি ও বানর জাতীয় প্রাণীর সামাজিক জীবন, আচরণ, বিবর্তন ও তাদের জীববিদ্যা, গবেষনা করা এই কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে সংক্ষেপে তুলে ধরা যায়৷ জৈবিক নৃবিজ্ঞান জীববিজ্ঞান, (Biology), প্রাণীবিদ্যা, ভূতত্ত্ব, অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, মেডিসিন এবং জনস্বাস্থ্য এই বৈজ্ঞানিক পাঠের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এছাড়া প্যালিও এনথ্রোপলজি( Paleo Anthropology), অস্টেওলজি এবং প্রত্মতত্ত্বকেও (Archeology) অন্তর্ভুক্ত করে।

প্রত্মতাত্ত্বিক নৃবিজ্ঞান বা প্রত্মতত্ত্বঃ প্রত্মতত্ত্ব হচ্ছে দেহাবশেষ উপাদানের মাধমে অতীত সংস্কৃতির অধ্যয়ন। প্রত্মতত্ত্ববিদরা ডাইনোসর কিংবা প্রাচীন ফসিল খুঁজে বের করেন না যা মূলত জীবাশ্মবিদদের কাজ। আমাদের সংস্কৃতিকে বুঝতে প্রত্মতত্ত্ববিদরা অতীব গুরুত্বপূর্ণ সময়ের মাত্রা যোগ করেন। অনেক প্রত্মতত্ত্ববিদরা প্রাগৈতিহাসিক সমাজকে অধ্যয়ন করেন_ যেগুলোর কোনো লিখিত উপাদান নেই বা পাঠোদ্ধারও সম্ভব হয় নি৷ তবে, যখন কোনো লিখিত উপাদান বা আর্টিফ্যাক্ট খুঁজে পান যেমন প্রাচীন গ্রীস বা আমেরিকার উপনিবেশবাদ তখন তারা এর সাহায্যে আমাদের পূর্বপুরুষের সংস্কৃতি ও জীবনপ্রণালি বুঝতে সহায়তা করেন৷ প্রত্মতত্ত্ববিদদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বিভিন্ন আর্টিফ্যাক্টের বা দেহাবশেষের সাহাযে অতীতের সংস্কৃতিতে পুনর্নির্মাণ করা। আর্টিফ্যাক্ট মানুষের তৈরি, ব্যবহৃত বা পরিত্যক্ত (ব্যবহার পরবর্তী) যে কোন বস্তু ই হতে পারে। এর মধ্যে মৃৎপাত্র, হাতিয়ার, যন্ত্রপাতি বা অন্য যেকোন কিছু ই উল্লেখযোগ্য যা কোনো সমাজ রেখে গিয়েছে। সাধারণত মিডিয়াগুলোতে প্রত্মতত্ত্বকে প্রধানত প্রাগৈতিহাসিক ও প্রাচীন সংস্কৃতি যেমন (মিশরীয় বিভিন্ন স্থাপনা বা পিরামিড) এগুলোকে উদ্ভাবনকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ফলশ্রুতিতে, বেশিরভাগ লোকই এঁদেরকে সংগ্রাহক হিসেবে দেখে।কিন্তু প্রত্মতত্ত্ব খননকাজ কিংবা প্রাচীন সংস্কৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং সমসাময়িক বিষয় নিয়েও আলোকপাত করে। সমসাময়িক প্রত্মতত্ত্ববিদরা সংগ্রহশালা তৈরি করার চেয়ে অতীত সংস্কৃতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র বা আর্টিফ্যাক্টের সাহায্যে তাঁদের আচরণ বুঝতে সাহায্য করে এবং এর ব্যাখ্যা দেয়৷ তাঁদের প্রধান কাজ হলো মানুষ কিভাবে প্রকৃতির উপর নির্ভর করে বসবাস করতো, প্রকৃতিকে কিভাবে সে নিজের বুদ্ধিমত্তায় জয় করে সভ্যতার দিকে এগিয়ে আসে তার ব্যাখ্যা দেয়। এইজন্য বিভিন্ন উপাদানের প্রয়োজন হয়। যে প্রেক্ষাপটে জিনিসগুলি পাওয়া যায়, প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের অবস্থান এবং সেই অবস্থানের  মধ্যে আর্টফ্যাক্টগুলোর সুনির্দিষ্ট অবস্থান ব্যাখ্যার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আবার, এগুলো মাঝেমধ্যে  আর্টফ্যাক্টগুলোর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

এই ধরনের তথ্য বিশ্লেষণ করে, প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রাচীন অর্থনীতি সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন যেমন কোনো দল কি শিকার থেকে তার মাংস পেয়েছিল, নাকি তারা মেস্টিকেট করে পশুদের প্রজনন করেছিল, তারা কি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট বয়স এবং লিঙ্গের লোকদের হত্যা করেছিল?  উদ্ভিদের খাদ্য কি বন্য গাছপালা থেকে এসেছে নাকি ফসলের বীজ বপন, পরিচর্যা ও ফসল তোলা থেকে এসেছে?  বাসিন্দারা কি নির্দিষ্ট আইটেম তৈরি, বাণিজ্য বা ক্রয় করেছেন?  স্থানীয়ভাবে কাঁচামাল পাওয়া যেত?  তা না হলে এরা কোথায় থেকে এল?  এই ধরনের তথ্য থেকে, প্রত্নতাত্ত্বিকরা উৎপাদন, বাণিজ্য, এবং খরচের নিদর্শন পুনর্গঠন করেন। প্রত্নতত্ত্ববিদ অনেক সময় বিভিন্ন  মৃৎপাত্র বা হাতিয়ারগুলোর সাহায্যে আমাদের পূর্ব পুরুষদের রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। যেগুলোর সাহায্যে বুঝা যায় যে সম্ভবত তারা একে অপরের সাথে ব্যবসা করত বা একই রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্য সংগ্রাম করতো।

অনেক প্রত্নতত্ত্ববিদ প্রত্মবাস্তুবিদ্যাও নিরীক্ষা করেন।  প্রত্মবাস্তুবিদ্যা অতীতের পরিবেশের দিকে আলোকপাত করে এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীর ফসিলকে পরিবেশের সাথে সম্পর্কিত করে তার ব্যাখ্যা দেয়। বাস্তুবিদ্যা হল একটি পরিবেশে জীবিত বস্তুর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের অধ্যয়ন।  জীব এবং পরিবেশ একসাথে একটি বাস্তুতন্ত্র গঠন করে, শক্তি প্রবাহ এবং পূর্ব পরিবর্তনের একটি প্যাটার্ন বিন্যাস। বেনেটের মতে (১৯৬৯), মানব বাস্তুতন্ত্র পরিবেশের বিভিন্ন ধরনকে অধ্যয়ন করে যা মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে, যে উপায়ে মানুষের ব্যবহার “প্রকৃতিকে প্রভাবিত করে এবং সামাজিক সংগঠন এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ দ্বারা প্রভাবিত হয়।

প্রত্নতত্ত্ববিদরা এর পাশাপাশি কোনো নিদর্শনের সাংস্কৃতিক রুপান্তরকে অনুমান করে থাকেন। ঐ স্থানে বসবাসকারী লোকদের সামাজিক ব্যবস্থা, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, ধর্মীয় বিশ্বাস, বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান এসব ব্যাখ্যা করে থাকেন।

প্রত্নতত্ত্বের আরও কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। এর মধ্যে নগর প্রত্নতত্ত্ব একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। নগর প্রত্নতাত্ত্বিকরা বর্তমান সময়ের শহরগুলির সাম্প্রতিক এবং দূরবর্তী অতীতের সন্ধান করেন৷ এর মাধ্যমে, তারা প্রায়শই ইতিহাসের বই থেকে বাদ পড়ে যাওয়া মানুষের জ্ঞান উন্মোচন করে, যা অতীত সম্পর্কে আমাদের বোঝার চেয়ে অনেক বেশি সমৃদ্ধ করে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, এলিজাবেথ স্কটসের (২০০১) আমেরিকার লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের নিনা প্ল্যান্টেশনে করা কাজের কথা বলা যায় যা আমাদের ১৮২০ হতে ১৮৯০ পর্যন্ত  দাসদের জীবন ও মুক্তির ইতিহাস বুঝতে সহায়তা করে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিশেষত্ব হচ্ছে  সিআরএম (CRM- Cultural Resources Management)।  সিআরএম-এ কর্মরত প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রত্নতাত্ত্বিক, সংরক্ষণাগার এবং স্থাপত্য সংস্থানগুলির সুরক্ষা এবং পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট৷  এগুলি প্রায় ই ফেডারেল, রাজ্য এবং স্থানীয় সংস্থাগুলি দ্বারা নিযুক্ত করা হয় এই জাতীয় সাংস্কৃতিক সংস্থানগুলির সুরক্ষা এবং পরিচালনার জন্য পরিকল্পনা তৈরি এবং বাস্তবায়নের জন্য৷ যদিও প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রাগৈতিহাসিক অধ্যয়নের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত, অর্থাৎ লেখার আবিষ্কারের আগের সময়কাল, তবুও তারা ঐতিহাসিক এবং এমনকি জীবিত মানুষের সংস্কৃতিও অধ্যয়ন করে।

ভাষাগত নৃবিজ্ঞানঃ ভাষাগত নৃবিজ্ঞান ভাষাকে তার নিজস্ব সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে, স্থান ও সময়ের ভিত্তিতে অধ্যয়ন করে। ভাষাগত নৃবিজ্ঞান মূলত বিশ্লেষন করে ভাষার চলমান প্রক্রিয়া, প্রকরণ এবং ভাষার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে। ভাষাগত নৃবিজ্ঞানের আলোচনাকে সংক্ষেপে তিনটি আলোচনায় বুঝা যায় ; ভাষার সার্বজনীন বৈশিষ্ট্য ও মানব মস্তিষ্কে ভাষার অভিন্নতা অধ্যয়ন, প্রাচীন ভাষাগুলোকে তাদের সমসাময়িক বংশধরদের তুলনা ও পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করে একই সাথে তার ইতিহাস অধ্যয়ন করে। ভিন্ন ভিন্ন সমাজ সংস্কৃতির চিন্তার ধরন ও উপলব্ধি আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে ভাষার বৈচিত্র্যতাকে অধ্যয়ন করে।

নৃবিজ্ঞানের এই চারটি শাখা ছাড়াও রয়েছে ফলিত নৃবিজ্ঞান। American Anthropological Association (AAA) নৃবিজ্ঞানের আলাদা দুটি মাত্রাকে স্বীকৃতি  দিয়েছে। একটি একাডেমিক নৃবিজ্ঞান আরেকটি ফলিত নৃবিজ্ঞান যা মূলত জনসেবার উদ্দেশ্যে স্বীকৃত। ফলিত নৃবিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি, গবেষণা পদ্ধতি, তত্ত্ব ও তথ্যের প্রয়োগের মাধ্যমে সমসাময়িক সামাজিক সমস্যাগুলোকে মূল্যায়ন ও সমাধানের চেষ্টা করে। নৃবিজ্ঞানের চারটি সাবফিল্ড থেকে নৃবিজ্ঞানীরা জনস্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, ব্যবসা, বাজার গবেষনা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা, ইত্যাদি ক্ষেত্রে নৃবৈজ্ঞানিক জ্ঞান প্রয়োগ করেছে। ফলিত নৃবিজ্ঞান চিকিৎসা বিজ্ঞান, রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, গণ শিক্ষা ইত্যাদির কৌশল তৈরিতে সাহায্য করে। ফলিত নৃবিজ্ঞান সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন কার্যক্রম অধিক ফলপ্রসূ করতে সাহায্য করে৷

 

রেফারেন্স সমূহঃ

  1. Cultural Anthropology: Appreciating Cultural Diversity by Conrad Phillip Kottak
  2. Mirror for Humanity: A Concise Introduction to Cultural Anthropology by Conrad Phillip Kottak
  3. নৃবিজ্ঞানের প্রথম পাঠঃ সমাজ ও সংস্কৃতি, লেখকঃ রেহনুমা আহমেদ, মানস চৌধুরী

………………………………………………………..

লিখেছেন:

নুরুল আমিন

শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

[লেখাটির সকল দায়ভার লেখক নিজে সংরক্ষণ করবেন]

 

Share123Tweet77
anthrobd

anthrobd

Related Posts

Education

লেসলি এ. হোয়াইট (১৯০০-১৯৭৫) এর জীবনবৃত্তান্ত

October 23, 2024

আমেরিকান নৃবিজ্ঞানী লেসলি এ. হোয়াইট ১৯০০ সালে কলোরাডোতে  ( Colorado) জন্মগ্রহণ করেন।তিনি মূলত 'সাংস্কৃতিক বিবর্তন' এবং 'সংস্কৃতির বৈজ্ঞানিক অধ্যয়নে'র (Culturology)জন্য সুপরিচিত ছিলেন। আমেরিকান এই নৃবিজ্ঞানীর নৃবিজ্ঞানে আসার পথটা এত সরল ছিল না। বহুপথ ঘুরে তাঁকে নৃবিজ্ঞানে আসতে হয়েছে। লেসলি...

Education

কর্মজীবনে প্রাথমিক পর্যায়ের গবেষকদের জন্য পরামর্শ:  যে ১০ টি বিষয় এড়িয়ে চলতে হবে

October 23, 2024

আমাদের লেখকদের  কাজ এবং জীবনধারা উন্নত করতে সাহায্য করার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর এর একটি বড় অংশই হলো যারা কর্মজীবনে গবেষক হিসেবে কেবল যাত্রা শুরু করেছে, তাদের জন্য পরামর্শ প্রদান করা- যা তাদের সাহায্য করবে বলে আমরা মনে করি।...

Education

নারীরা কেন পুরুষের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করে? একটি নতুন নৃবৈজ্ঞানিক গবেষণায় এর উত্তর প্রদান

October 23, 2024

বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষই শারীরিক পরিশ্রমে প্রতিদিন প্রচুর সময় এবং শক্তি ব্যয় করেন। কিন্তু পরিবারে পুরুষ কিংবা নারী কে কঠোর পরিশ্রম করছে, তা কোন বিষয়গুলো নির্ধারণ করে? যেমন, বেশিরভাগ শিকারী-সংগ্রাহক সমাজে, পুরুষরা শিকারী এবং মহিলারা সংগ্রহকারী হওয়ায় পুরুষরা‌ সবচেয়ে দূরে...

Education

‘আমাদের আত্মা মরে গেছে’: কিভাবে আমি উইঘুরদের জন্য নির্মিত চীনা ‘পুনঃশিক্ষা’ শিবিরে টিকে ছিলাম

October 23, 2024

এই লেখাটি ব্রিটিশ ওয়েবসাইট www.theguardian.com এ প্রকাশিত প্রবন্ধ থেকে অনূদিত হয়েছে। প্রবন্ধটির ইংরেজি সংস্করণটি সম্পাদনা করেছেন Edward Gauvin। তিনি Gulbahar Haitiwaji ও Rozenn Morgat কর্তৃক রচিত মূল লেখা Rescapée du Goulag Chinois (Survivor of the Chinese Gulag) থেকে মূল...

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

About Me

AnthroBD

Serdadu Tridatu

Blogger & Traveler

Hello & welcome to my blog! My name is Serdadu Tridatu and I'm a 20-year-old independent blogger with a passion for sharing about fashion and lifestyle.

Categories

  • Education (9)

Popular

  • নৃবিজ্ঞানঃ সংজ্ঞায়ন ও আলোচ্য বিষয়

    307 shares
    Share 123 Tweet 77
  • নৃবিজ্ঞান ও নৃবিজ্ঞানী

    302 shares
    Share 121 Tweet 76
  • নৃবিজ্ঞান যেখানে স্বতন্ত্র

    301 shares
    Share 120 Tweet 75
  • লেসলি এ. হোয়াইট (১৯০০-১৯৭৫) এর জীবনবৃত্তান্ত

    301 shares
    Share 120 Tweet 75
  • জন ফার্গুসন ম্যাকলেন্নান এর জীবনবৃত্তান্ত

    301 shares
    Share 120 Tweet 75

Instagram

    Go to the Customizer > JNews : Social, Like & View > Instagram Feed Setting, to connect your Instagram account.
  • Landing Page
  • Buy JNews
  • About Me
  • Contact

© Copyright 2018 JNews - Premium WordPress Theme.

No Result
View All Result
  • Home
    • Home – Layout 1
    • Home – Layout 2
    • Home – Layout 3
  • About Me
  • Contact